আমাদের রেশনিং সিস্টেমে এখন বিপ্লব ঘটেছে। ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে রেশনের পণ্য। ২০১৩ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সরকার রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ করে। এই যোজনার অধীনে দেশের সমগ্র মানুষকে রেশনিং সিস্টেমের আওতায় আনা হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে আসে। যেখানে রাজ্যের মানুষকে দু-টাকা কেজি দরে রেশনের পণ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ২০২০ সাল দেশজুড়ে করোনা মহামারীর লকডাউন। দেশের মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকে বিনামূল্যে রেশন পরিষেবা পান রাজ্যের কয়েক কোটি মানুষ। পরবর্তী ক্ষেত্রে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দুয়ারে রেশন কর্মসূচিতে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে রেশনের পণ্য সামগ্রী।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ আর্থিক উদ্যোগে তৈরি এই প্রকল্পে ৫ ধরনের নতুন রেশন কার্ড করা হয় – AAY,PHH,APHH, RKSY-1, RKSY-2। আর এই কার্ড বিভাজন নেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। কার্ড তৈরির সময় একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসলে যারা BPL তালিকাভুক্ত পরিবার তাদের APL কার্ড এসেছে অর্থাৎ তারা RKSY -১ এবং RKSY -২ কার্ড পেয়েছে। এই দুই কার্ডের বেনিফিট সব চেয়ে কম। এমনকি আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল পরিবার যারা সাধারণত APL তালিকাভুক্ত তারা BPL কার্ড পেয়েছে যেমন AAY, PHH SPHH। এই কার্ড গুলিতে রেশনের বেনিফিট সব চেয়ে বেশি। এমনকি, একই পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের একাধিক ধরনের রেশন কার্ডের এসেছে। মূলত আবেদন পত্রে ভুল, পরিদর্শকের ভুল রিপোর্ট, খাদ্যদপ্তরের ত্রুটি এবং লোকাল রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এরফলে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ পিছিয়ে পড়া BPL তালিকাভুক্ত মানুষের পরিবার। এমনকি রেশন নিয়ে দুর্নীতি ও বৈষম্যের অভিযোগ উঠছে।
APL থেকে BPL করার নিয়ম গুলি হল:- যদি আপনার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ভিন্ন রেশন কার্ড এসে থাকে। তাহলে আপনাকে আবেদন করার কোন প্রয়োজন নেই। রাজ্যের খাদ্যদপ্তর নিজেদের উদ্যোগেই পরিবারের বাকি সদস্যদের একই কার্ড করে দেবে। সেই কার্ড পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাবে। কিংবা আপনি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- রাজ্যের SSC তে ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী পুনঃনিয়োগের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর। কতটা এগুলো প্রক্রিয়া?
কিন্তু যদি আপনি BPL তালিকাভুক্ত কিন্তু BPL তালিকার রেশন কার্ডের বদলে APL কার্ড আছে তাহলে আপনাকে ব্লক অফিস কিংবা পৌরসভা অফিস গিয়ে আবেদন করতে হবে। এমনকি দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতেও এর আবেদন করা যায়। শুধু অফলাইনে নয়, অনলাইনেও খাদ্যদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের কার্ড নং, আধার কার্ড নং এবং মোবাইল নং আসা OTP দিয়ে আবেদন করা যায়।
এই আবেদনের জন্য যোগ্যতা:- আবেদনকারীর পূর্বে BPL রেশন কার্ড থাকতে হবে। আবেদনকারীর নিজস্ব জমি থাকা চলবে না। আবেদনকারী বড় বাড়ি থাকলে হবেনা। কোন সরকারী ও বেসরকারী সংস্থায় কাজ করা চলবে না।
আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় নথি:- খাদ্যদপ্তর নির্দেশিত ফরম,আবেদনকারীর বর্তমান রেশন কার্ড, আধারকার্ড, ভূমিহীনের প্রমাণপত্র, ইনকাম সার্টিফিকেট,মোবাইল নং এবং পূর্বের BPL রেশন কার্ড। এখানে পরিবারের কর্তার নামেই আবেদন করতে হবে। পরিবারের প্রধান ও সদস্যদের এই সমস্ত নথি প্রদান করতে হবে।
কার্ড পরিবর্তনের পদ্ধতি:- আবেদনকারীদের সঠিক তথ্য দিয়ে অফলাইনে বা অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তথ্যে কোন ভুল থাকা চলবে না। আবেদন করার পর খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা আপনার বাড়িতে পরিদর্শনে আসতে পারেন। তারপরই আপনার আবেদন অনুমোদন পাবে এবং আপনার রেশন কার্ড পরিবর্তন হবে।
এই বিষয় সম্পর্কে আরও জানতে আপনার ব্লক অথবা পৌরসভা অফিসে যোগাযোগ করুন। এছাড়াও রাজ্য সরকারের খাদ্যদপ্তরের নিম্নলিখিত ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।