ভারতীয়দের কাছে একটি খুশির খবর নিয়ে হাজির কেন্দ্র সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার আবারও আর্থিক সুবিধার উপহার নিয়ে এল। মোদী সরকার দ্বারা প্রদত্ত ই-শ্রম কার্ডের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা পেতে চলেছেন লক্ষ লক্ষ দেশের মানুষ। সমাজের গরীব ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর শ্রমজীবী মানুষ এই যোজনার বিশেষ সুবিধা পেতে চলেছেন।
বিরাট সংখ্যক দেশের মানুষ কৃষিকাজ, কারখানার শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসা অথবা কুটির শিল্পে কাজ করে দিন গুজরান করেন। এই সমস্ত অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মরত শ্রমজীবী মানুষের কোন সামাজিক সুরক্ষা ও স্থায়ী আর্থিক ভরসা থাকেনা। বয়স্ক অবস্থায় তারা পেনসন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও বিমার মতো কোন সুবিধা পাননা। এই সমস্ত মানুষের স্বার্থ চিন্তা করেই কেন্দ্র সরকার ই-শ্রম কার্ড চালু করেছে। এই কার্ডের মাধ্যমে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষ সামাজিক সুরক্ষা ও নিজের কাজের একটি পরিচয় পত্র পাবেন।
কেন্দ্র সরকার দ্বারা প্রদত্ত এই ই-শ্রম কার্ড হল NDUW অর্থাৎ ন্যাশনাল ডেটাবেস অফ আনঅর্গানাইজড ওয়ার্কার্স – এর অংশ বিশেষ। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের যুক্ত শ্রমজীবী মানুষের নাম অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই ই- শ্রম কার্ডধারী মানুষজন ভারত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ ও সুবিধা পেয়ে উপকৃত হবেন। ই-শ্রম কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা নিজেদের জন্য পৃথক পৃথক UAN অর্থাৎ ইউনিক ইউনিভার্সাল একাউন্ট নং পাবেন। ই-শ্রম কার্ডের এই ইউনিক নম্বর সারাদেশে গ্রহণযোগ্য ।
আরও পড়ুন:- পুজোর আগে অল্প পুঁজিতে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করবেন? জেনে নিন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
ই-শ্রম কার্ডের সুবিধা:- এই কার্ডের উপভোক্তারা তাদের ৬০ বছর বয়সের পর প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে ভাতা পাবেন। এই কার্ডের হোল্ডাররা কেন্দ্র সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা (PMSBY) প্রকল্পের আওতায় দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবার এককালীন ২ লক্ষ টাকা পাবেন এবং দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার কারণে আংশিক অক্ষমতার জন্য এককালীন ১ লক্ষ টাকার আর্থিক সুবিধা পাবেন। এই কার্ড ব্যবহারকারী নারীগণ মাতৃত্বকালীন বিশেষ আর্থিক সুবিধা পাবেন। এই বিশেষ কার্ডের উপভক্তারা কেন্দ্র সরকার প্রদত্ত PMKISAN এবং আয়ুষ্মান ভারত যোজনার সমস্ত সুবিধা পাবেন।
ই-শ্রম কার্ডের আবেদনের যোগ্যতা:- এই কার্ডের আবেদনকারীকে অবশ্যই একজন ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। আবেদনকারী ব্যক্তির বয়স ১৮-৫৯ বছরের মধ্যে হওয়া আবশ্যিক। এই প্রকল্পের আবেদনকারীকে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী শ্রেণীর মানুষ হতে হবে (যেমন- কৃষক, ক্ষেতমজুর, কারখানার শ্রমিক, পরিবহন কর্মী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইত্যাদি)। আবেদনকারীর বয়স অনুযায়ী মাসিক ৫৫ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত টাকা ঐ ই-শ্রম কার্ডের জমা করা আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হবে। আর, ব্যক্তির জমা করা টাকার সমপরিমাণ টাকা সরকার প্রতিমাসে ঐ ই-শ্রম কার্ডধারী ব্যক্তির কার্ডে জমা করবে।
ই-শ্রম কার্ডের উদ্দেশ্য:- দেশের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের ক্ষমতায়ন করা। দেশের নিচুতলার শ্রমজীবী মানুষকে জাতীয় স্তরে একটি বৃহত্তর ছাতার তলায় নিয়ে আসা। আমাদের দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রে যুক্ত শ্রমজীবী মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করা। অসংগঠিত ক্ষেত্রের যুক্ত মানুষদের বৃদ্ধ বয়সে অবসরকালীন সময় পেনসেন ও বীমা সুনিশ্চিত করা।
এই কার্ডে আবেদন প্রয়োজনীয় নথিগুলি:- ই-শ্রম কার্ড আবেদনকারী ব্যক্তির আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, মোবাইল নং, ব্যাংক একাউন্ট, প্যান কার্ড, পেশার প্রমাণপত্র ও বাসিন্দা সার্টিফিকেট।
এই কার্ড প্রকল্পে আবেদন করার পদ্ধতি :- ই-শ্রম কার্ডের আবেদন করা হয় পুরোপুরি অনলাইন মাধ্যমে। কেন্দ্র সরকারের ই-শ্রম কার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আধার কার্ড ও ফোন নং দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আবেদনকারী ব্যক্তির আধার কার্ডের সাথে মোবাইল নং সংযুক্ত থাকা আবশ্যিক। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশানের সঙ্গে নিজের সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। আবেদন করার সময় সব অরিজিনাল নথি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। আবেদনের সমস্ত প্রসেস পূর্ণ হওয়ার পর PDF আকারে ই-শ্রম কার্ড ডাউনলোড করা যাবে। আপনার প্রদত্ত সমস্ত তথ্যের উপর নির্ভর করে কেন্দ্র সরকার আপনার জন্য নির্দিষ্ট নাম্বারের ই-শ্রম কার্ডের অনুমোদন দেবে। এই ই-শ্রম কার্ড দেশের পিছিয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের রক্ষা কবচ। এই ই-শ্রম কার্ডের জন্য আবেদন করতে নিম্নলিখিত ওয়েবসাইটে নজর রাখুন,
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট:- Link