রাজ্য জুড়ে এখনও বৃষ্টির ঘনঘটা চলছে। শরৎকালের আমেজ এখনও উপভোগ করতে পারেনি বাঙালি। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ অতিবাহিত। হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। এই মাসের শেষেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। মাঝে মধ্যে আকাশে তুলোর মতো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে, মাঠের ধারে সাদা কাশফুল দোলা দিচ্ছে এবং বাতাসে শিউলি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকৃতি বলে দিচ্ছে মা দুর্গার মর্তে আসার সময় হয়েছে। উমাকে মর্তে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত বাংলা। ঠাকুরগড়া ও প্যান্ডেল বাঁধার কাজ চলছে জোর কদমে। হাতে মাত্র সপ্তাহ তিনেক সময়। তার পরেই দুর্গাপুজো। সেই উৎসবেই মেতে উঠবে বাংলার মানুষ। সারা বছরের প্রতীক্ষা শেষে আট থেকে আশি উৎসবের জোয়ারে গা ভাসাবে।
পুজোর সময় বাঙালির সব চেয়ে বড় কৌতূহল থাকে ছুটি নিয়ে। পুজোর কেনাকাটার জন্য পুজোর আগে ছুটি পেলে খুশি হয় বাংলার মানুষ। খুশি হয় পুজোর বাজারের দিকে তাকিয়ে থাকা ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, মহাষষ্ঠীর আগে দু-একদিন ছুটি পেলে কলকাতায় পুজো দেখে জেলার বাড়িতে ফিরতে পারেন বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় থাকা মানুষজন। পুজোর কটাদিন বেশিরভাগ কর্মীরা ছুটি পান। তবে কিছু বেসরকারি সংস্থা পুজোর কটাদিনও ছুটি দেয়না। এই কারণে সমস্যায় পড়েন কর্মীরা। মহাদশমী ও লক্ষী পুজোর মধ্যে ছুটি পেলে খুশি হন ভ্রমণপিপাসু বাঙালিরা। পুজোর ছুটিতে পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে দেশে বিদেশে বেড়াতে যান। তাই পুজোয় কদিন ছুটি থাকছে সেই নিয়েই নজর থাকে বাঙালিদের।
দেখে নেওয়া যাক পুজোর মাসে কদিন ছুটি পাবেন সরকারি ও বেসরকারি কর্মীরা। সেপ্টেম্বর মাসের ৫-৬ তারিখ ও ১২-১৩ তারিখ শনিবার-রবিবার। এই ছুটির দিনগুলি পুজোর শপিং এর কাজে ব্যবহৃত করবেন বাঙালিরা। তবে শনিবার যাদের অফিস বন্ধ নয় তাদের রবিবারই একমাত্র ভরসা। যেহেতু এবছর অনেক আগে শুরু হচ্ছে তাই বিশ্বকর্মা পুজো ও দুর্গাপুজোর মধ্যে বেশি দূরত্ব থাকছে না। আগামী ১৭ আগস্ট বুধবার বিশ্বকর্মা পুজো। এই ছুটির দিনটিতে পুজোর কেনাকাটা জমজমাট হতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
আরও পড়ুন:- প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার আবেদন চলছে। এই প্রকল্পের সুবিধা কি?
এবছর ২১ তারিখ মহালয়া। দেবী পক্ষের সূচনা। এই ছুটির দিনটিকেও পুজোর কেনাকাটার কাজে লাগাতে পারবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এবছর মহালয়া পড়ছে রবিবার। তাই মহালয়ার জন্য একটা ছুটি এবার থাকছে না। এই বছর মহাষষ্ঠী ২৮ শে সেপ্টেম্বর এবং মহাদশমী ২ রা অক্টোবর। রাজ্য সরকারের পুজোর ছুটি শুরু হচ্ছে ২৬শে সেপ্টেম্বর থেকে ছুটি শেষ লক্ষীপুজোর (৭ই অক্টোবর) পরের দিন অর্থাৎ ৮ই অক্টোবর। এই টানা ছুটিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা পুজোর আনন্দ এবং পুজোর পর বেড়াতে যাওয়ার আনন্দ দুটোই জমিয়ে করতে পারবেন।
কিন্তু কেন্দ্র সরকারি কর্মচারী ও বেসরকারি সংস্থার কর্মচারীদের জন্য একটু আপসোস থেকে যাচ্ছে। এবার মহাষষ্ঠী পড়েছে রবিবার। অর্থাৎ এখানে একটা ছুটি তাদের নষ্ট হল। অন্যদিকে, এবার মহাদশমী হল ২ রা অক্টোবর অর্থাৎ গান্ধী জয়ন্তী যেটি হল জাতীয় ছুটি। এরজন্য তাদের আরও একটি ছুটি নষ্ট হতে চলেছে। তবে যেসমস্ত কর্মীদের শনিবার অফিস ছুটি থাকে তারা ২১ শে সেপ্টেম্বর ও ২৭ শে সেপ্টেম্বর এই দুই শনিবার পুজোর কেনাকাটার কাজে লাগাতে পারবেন।
পুজোয় সবচেয়ে অখুশি থাকেন সে সব মানুষ যারা বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার জন্য সবচেয়ে কম ছুটি পান। শুধুমাত্র সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী ছুটি পান। এমনও কিছু সংস্থা আছে যেখানে শুধুমাত্র দশমীর দিন ছুটি, তাদের পুজো খুবই আখুশীতে কাটে। অন্যদিকে সরকারি সংস্থায় যারা জরুরি পরিষেবার সাথে যুক্ত যেমন – পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী, ফায়ারব্রিগেড, পানীয় জল, দুধ সরবরাহ,সেনাবাহিনী ও পরিবহনকর্মী সহ একাধিক পেশার মানুষজন পুজোতে ছুটি পাননা। বরং বেশি কাজ তাদের করতে হয়। তাদের কাছে পুজোর কটাদিন খুবই কষ্টের হয়ে উঠে।