Just follow this one rule to live healthy and longer. (দীর্ঘদিন সুস্থ ভাবে বাঁচতে চান? মেনে চলুন শুধু এই একটি নিয়ম।)

নেটিজনদের কাছে এখন খুব কমন শব্দ হল অটোফ্যাগি। শরীরকে সুস্থ রাখতে নাকি অটোফ্যাগি খুবই গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠছে। আসতে আসতে গোটা বিশ্বজুড়ে অটোফ্যাগির গুরুত্ব ছড়িয়ে পড়েছে। মেডিকেল জগতের নতুন সেনসেশন এখন অটোফ্যাগি।

অটোফ্যাগি হল আত্মভক্ষণ বা স্ব-ভক্ষণ। প্রতিটি জীবের স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়ায় জীবনকে সুস্থ রাখার জন্য কোষের অভ্যন্তরীণ অটোফ্যাগি বা আত্মভক্ষণ ঘটনাটি ঘটে। এটি এমন একটি শারীরবৃত্তীয় ঘটনা যেখানে কোষ নিজেই নিজেকে সুস্থ রাখে। শরীরে খাদ্য ও পুষ্টি অভাব ঘটলে কোষ গুলি তাদের অন্য ক্ষতিগ্রস্ত ও মৃতপ্রায় কোষগুলিকে ধ্বংস করে বা মেরে ফেলে সেখান থেকে নতুন কোষ সৃষ্টি করে। উপবাস বা খাদ্য ভক্ষণে দেরি হলে মৃত কোষ গুলিকে খেয়ে সজিব কোষ গুলি নিজেরা সতেজ হয়ে উঠে এবং নতুন কোষ গঠন করে।

শরীরের কোষের মধ্যে এই প্রোটিনের ক্ষয়, মৃতপ্রায় ও ক্ষতিগ্রস্ত কোষের স্থানে নতুন কোষ গঠন করাকেই অটোফ্যাগি বলে। ক্ষতিগ্রস্ত, মৃতপ্রায়, পচনশীল ও ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত কোষগুলিকে খেয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রতিটি শরীর এই পদ্ধতি রোগগ্রস্ত ও পচনশীল কোষ গুলিকে ভক্ষণ করে দেহ থেকে রোগ মুক্তি ঘটায়। অটোফ্যাগি সঠিক ভাবে না ঘটলে মানব শরীরে ডায়াবেটিস, পারকিনসন ও ক্যান্সারের মতো রোগ দেখা যায়। শরীরে এই প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটলেই শরীর বার্ধক্যজনিত রোগের আক্রমণে পরে।

আরও পড়ুন:- APL রেশন কার্ড থেকে BPL রেশন কার্ড করতে চান। জেনে নিন পদ্ধতি।

বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিটি মানবদেহে ক্রিয়াহীন কোষ গুলির ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। ৬০- এর দশকে এই ঘটনাটি বিজ্ঞানীদের নজরে আসে। তারা দেখতে পান, কিভাবে কোষ নিজের থেকেই কোষে সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত উপাদান গুলিকে ভিত্তি ঝিল্লি তৈরি করে ছেঁকে লাইসোজাইম কোষঅঙ্গানুকে ফেলে রিসাইক্লিং করে। ৯০- এর দশকে জাপানি বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহশোমি বেকারিতে পাউরুটি তৈরিতে ব্যবহৃত ছত্রাক ইস্টের এই জিনটিকে সনাক্ত করেন যেটি এই অটোফ্যাগির জন্য দায়ী। তারপর তিনি এই বিষয়টি নিয়ে মানবশরীরে কাজ করতে শুরু করেন। তিনিই সেই বিজ্ঞানী যিনি কোষের অভ্যন্তরে এই অটোফ্যাগি প্রক্রিয়া আবিষ্কার করে ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

শরীরের কোষের মধ্যে অটোফ্যাগি প্রক্রিয়া ঘটে যখন শরীরের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি ঘটে। দীর্ঘ খাদ্য বিরতি থাকলে কিংবা পুষ্টির অভাব থাকলে কোষের মধ্যে বর্জ্য পদার্থ বা রোগগ্রস্ত কোষগুলিকে ব্যবহার করে সজিব কোষগুলি শক্তি উৎপাদন করে। সেই সঙ্গে, মৃতপ্রায় কোষ গুলিকে মেরে নতুন কোষ সৃষ্টি করে। এই শারীরবৃত্তীয় কাজের দ্বারা শরীর সুস্থ থাকে। সেই সাথে, মানব শরীরে বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম এই অটোফ্যাগি। বিজ্ঞানীদের অনুমান ভবিষ্যতে এই অটোফ্যাগিকে কাজে লাগিয়ে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে।

তাই, শরীরে এই অটোফ্যাগি ঘটনার ঘটার জন্য মাঝে মাঝে খাদ্য বিরতি দিতে হবে। মাঝে মধ্যে একদিন উপবাস করেও থাকতে পারেন। শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় কম খাদ্য ভক্ষণ করে পুষ্টির অভাব তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে অটোফ্যাগির মাধ্যমে শরীর সুস্থ থাকবে এবং শরীর থেকে ক্ষতিগ্রস্থ কোষগুলির মুক্তি ঘটবে। এরফলে, ভবিষ্যতে মারণ রোগগুলির প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। তবে, একটানা উপবাস করতে থাকলে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। তাই, এই খাদ্য বিরতি বা উপবাস করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *