মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর অনেক জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। রাজ্য সরকারের প্রকল্প গুলির মধ্যে অন্যতম হল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প।রাজ্যের প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য বীমা সুনিশ্চিত করতেই এই প্রকল্পের অনুমোদন করে নবান্ন। ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষ এই প্রকল্পের দ্বারা উপকৃত হয়ে আসছে।
এই প্রকল্পের সুবিধা:- স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় একটি পরিবারকে স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা দেওয়া হয়। উপভোক্তার পরিবার বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পান। এই কার্ড ব্যবহার করে রাজ্যের যে কোন নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালে গ্রাহকের পরিবার বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারেন। ঐ পরিবারের যে কোন সদস্যের চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ লাখ টাকা খরচ করে রাজ্য সরকার। চিকিৎসার খরচের সাথেই হাসপাতল থেকে ছুটির পর রোগীর ওষুধ ও বাড়ীতে যাওয়ার গাড়ি ভাড়া পর্যন্ত প্রদান করা হয়। এমনকি হার্টের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৬০ হাজার টাকার সুবিধা পাওয়া যায়।
ATM কার্ডের মতো এই ডিজিটাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের দ্বারা সুবিধা পাওয়া যায় সম্পূর্ণ ক্যাশলেশ সিস্টেমে। এক বছরে ৫ লাখ টাকার বেনিফিট খরচ হয়ে গেলে পরের বছর আবার বেনিফিট রিনিউয়াল হয়ে যায়। ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের পর্যন্ত চিকিৎসা হয় এই কার্ডের মাধ্যমে। এমনকি, রাজ্যের বাইরেও একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে এই কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা পান গ্রাহকরা। এমনকি, সরাসরি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যও এই কার্ড বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন:- তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে ট্যাব কেনার টাকা ঢুকছে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে। কিভাবে পাবেন এই টাকা?
এই প্রকল্পের আবেদনের যোগ্যতা:- স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে আবেদনের জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। সাধারণত মহিলাদের নামে এই কার্ড ইস্যু হয়। তবে পুরুষের নামেও এই কার্ড ইস্যু হতে পারে। আবেদনকারীর নামে কোন সরাসরি স্বাস্থ্য বীমা বা মেডিক্লেম থাকা চলবে না।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে আবেদনকরার জন্য প্রয়োজনীয় নথি:- এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য
আবেদনকারী ও তার পরিবারের সদস্যদের আধার কার্ড, খাদ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড, স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেট, ভোটার কার্ড ও মোবাইল নং প্রয়োজন। এই কার্ড করার জন্য আবেদনকারী ও পরিবারের সদস্যদের ফিঙ্গার প্রিন্ট বায়োমেট্রিক ও চোখের রেটিনা স্ক্যান দিতে হবে।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য:- রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য বীমা দেওয়ায় হল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি ঘটনার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চিকিৎসা সম্পর্কিত খরচ নিয়ে মানুষের দুশ্চিন্তা নির্মূল করায় এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের অন্যতম লক্ষ্য।
এই প্রকল্পের সীমাবদ্ধতা:- স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে গর্ভবতী মায়ের প্রসবের খরচ দেওয়া হয়না। হাড়ের চিকিৎসাও এই কার্ডের আওতায় পড়েনা। বড় বড় বেসরকারি হাসাপাতালে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের রুগীর আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ার কারণে অনেক সময় রুগী ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। স্বাস্থ্য ভবন থেকে এই কার্ডের বেনিফিটের অনুমোদন পেতে দেরি হলে হাসপাতাল থেকে রুগী ছুটি হতে দেরি হয়। এমনকি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের বেনিফিট কেটে নেওয়া হয়।
এই প্রকল্পের গুরুত্ব:- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের এই প্রকল্প স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের চিকিৎসার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তা নির্মূল করেছে এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এখন বাংলার মানুষের ভরসা ও বিশ্বাস। রাজ্যের প্রায় ১০ কোটি মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পান।
এই প্রকল্পের আবেদন করার পদ্ধতি:- স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আবেদন করা যায় স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস, ব্লক অফিস এবং পুরসভা অফিসে। দুয়ারে সরকার কর্মসুচিতে এই প্রকল্পের জন্য সহজে আবেদন করা যায়। শুধু অফলাইন নয়, অনলাইনেও এই প্রকল্পের আবেদন করা যায়। এই প্রকল্পের আবেদন করার জন্য স্বাস্থ্য সাথী পোর্টাল চালু করেছে রাজ্য সরকার।এই প্রকল্প সম্পর্কে আরও জানতে নিম্নলিখিত ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট:- লিঙ্ক